জিডিপির গ্রোথ সন্তানের ক্ষুধার কান্না থামাতে পারে না
দুই মাস চাকরী নেই। সন্তানের জন্য দুধ চুরি করতে গিয়ে বাবা ধরা পড়েছে। আমরা সকলেই ইতোমধ্যে জেনে গেছি, তবে যা আলোচনা হচ্ছে না তা হল চাকরীর বাজার। দেশে চাকরীর বাজার সঙ্কুচিত হয়ে আসছে। নেই জব সিকিউরিটি।
সম্প্রতি সংবাদ শুনলাম – ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ইতালি যাওয়ার পথে সাগরে প্রায় ৩০ জন বাংলাদেশি পানিতে ডুবে মারা গেছে। চিন্তা করে দেখুন, কতোটা নিরুপায় হলে কেউ সাঁতরে সমুদ্র পাড়ি দেয়ার কথা ভাবতে পারে!
আমি এমন অনেক ছেলেকেই জানি, গ্রাজুয়েশনের পর যারা বেকার বসে আছে। একটা চাকুরী আশায় দ্বারে দ্বারে ঘুরতে হচ্ছে। এইটা বাস্তবতা।
সরকারী চাকরী, বিসিএস কিংবা ব্যাংক ছাড়া চাকুরীর নিশ্চয়তা নেই কোথাও। একটা দেশের অর্থনীতির পিছনে অন্যতম চালিকা শক্তি থাকে প্রাইভেট প্রতিষ্ঠানগুলো। সেই প্রাইভেটে চাকুরীর নিশ্চয়তা কতোটুকু? জব সিকিউরিটি আদৌ কি আছে? একদিনের নোটিশে চাকরী চলে যেতে দেখেছি।
আরও পড়ুন
- উবার কেন লাভের মুখ দেখছে না?
- আত্মহত্যা: ‘অপশন’ নয়, বিলাসিতা
- হোপ ইজ আ ওয়ান্ডারফুল থিঙ
- র্যাংকিং মানি না! আমরা এমনিই সেরা!
- এসএসসি-এইচএসসির ফলাফল: প্রথম পাতায় শুধু মেয়েদের ছবি ছাপা হয় কেন?
সরকারী চাকরীর আসন সংখ্যা খুব সীমিত, ফলে প্রাইভেটাইজেশনের দিকেই বিপুল সংখ্যক চাকুরী প্রত্যাশীদের ঝুঁকতে হয়। কিন্তু সেই পরিমাণ কর্মক্ষেত্র প্রাইভেটেও নেই। অল্প বেতনে গাধার খাটুনি তারপরও নেই জব সিকিউরিটি। যা বেতন আসে দৈনন্দিন খরচ মেটাতেই সব শেষ হয়ে যায়। নেই সঞ্চয়।
অথচ ওয়েলথ এক্স-এর দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বে ‘অতি ধনী’ মানুষের সংখ্যা সবচেয়ে দ্রুত হারে বাড়ছে বাংলাদেশে। অর্থাৎ ধনীরাই কেবল ধনী হচ্ছে, গরীবদের অবস্থার পরিবর্তন হচ্ছে না অর্থের সুষম বন্টন হচ্ছে না। কিন্তু গ্যাস বিদ্যুৎ চালের দাম ঠিকই বেড়ে চলছে।
৭০ টাকা কেজি বেগুনের এই উচ্চ দ্রব্য মূল্যের বাজারে মধ্যবয়স্ক একজনের আচমকা চাকরী চলে গেলে কিংবা কোম্পানিটাই বন্ধ হয়ে গেলে সেই পরিবার দাঁড়াবে কোথায়? ক্ষুধায় কাতর সন্তানের মুখে কি তুলে দিবে?
জিডিপির গ্রোথ, স্যাটালাইট উড্ডয়ন কিংবা উন্নয়নের গপ্পো সন্তানের ক্ষুধার জ্বালার কান্না থামাতে পারে না।