‘গসিপ লিখে একটা পরিবার ভেঙে বিকৃত সুখ পায় সবাই’
সালমান শাহ যেদিন মারা যান, তার আগের দিন সন্ধ্যায় সাংবাদিক সুপন রায়ককে এক সাক্ষাৎকার দিয়েছিলেন। সেটাই তার শেষ কোনো সাক্ষাৎকার। আলাপচারিতা থেকে তার জীবনের টানাপোড়েনটার ব্যাপারে একটু হলেও আঁচ করা যায়। ছাপা হয় দৈনিক ভোরের কাগজে।
সালমান: কি খবর বস? কেমন আছেন?
প্রতিবেদক: আপনার খবর কি? শরীর কেমন?
সালমান: ভাল থাকি কেমনে? ভাল থাকতে দিলেন কই?
প্রতিবেদক: কেন, আবার কি হয়েছে?
সালমান: শাবনূরকে জড়াইয়া আর কতো! অনেকতো হলো। কি আর বাকি রইলো ক? বিয়া পর্যন্ত দিলো ওরা।
প্রতিবেদক: এর জন্য তো অনেকে আপনাকে দায়ী করে।
সালমান: (হতাশায় মাথা ঝাঁকালেন) কি করলাম আমি? শাবনূরের সঙ্গে ঘনিষ্টতা – এই তো বলবেন?
প্রতিবেদন: এই যে গাড়িতে পর্দা লাগিয়ে এক সঙ্গে ঘোরাফেরা…
সালমান: এক সঙ্গে একটার পর একটা ছবি করছি। শিডিউল মিলিয়ে কাজ করছি। এটাকে কি ঘনিষ্টতা বলে?
প্রতিবেদক: শাবনূরের গাড়ি থাকতে আপনার গাড়িতে চড়া…
সালমান: এটা কি দেশের কিছু? সবাই জানে আমি বিবাহিত। পিছু লাগার একটা সীমা আছে রে ভাই! আমি শেষ হয়ে যাচ্ছি।
প্রতিবেদক: তাহলে ভাবি কেন ঢাকায় নেই?
সালমান: ঢাকায় নেই মানে! সে তো এখন এই এফডিসিতেই। আপনি জানেনই না!
প্রতিবেদক: এতোদিন ছিল না কেন? নিশ্চয়ই এর পিছনে কারণ ছিল…
সালমান: ওই যে গাসিপ!
প্রতিবেদক: এখন কি অবস্থা?
সালমান: বউ ফিরে এসেছে। ‘বিড়লা’ থেকে ফিরে গত ২৩ আগস্ট ওর জন্মদিন পালন করলাম। আপনারা খারাপ দিকগুলো শুধু তুলে ধরেন। এসব তো লেখেন না। গসিপ লিখে একটা পরিবার ভাঙার মধ্যে কোনো বিকৃত সুখ পায় সবাই।
প্রতিবেদক: অন্য সবার কথা বলবো না, ভোরের কাগজ অন্তত গসিপকে পাত্তা দেয় না।
সালমান: আরে আপনাদের সম্পর্কে বলছি না। ওই যে (তখনকার বাজারে জনপ্রিয় আরেক পত্রিকার নাম বললেন সরাসরি) গতবার লিখলো আমার পক্ষে, এবার আমার বিরুদ্ধে। বলেন তো! মানুষ কেমনে যে এসব ছাইপাশ কেনে!
প্রতিবেদক: শরীর কেন এখন?
সালমান: ভাল না। ওই যে এক মাস আগে কিরণ ভাইয়ের (পরিচাক শাহ আলম কিরণ) ছবির শুটিংয়ে ব্যাথা পেয়েছিলাম। বুকে এখনো ব্যাথা রয়ে গেছে। (কথা বলতে বলতেই কাশলেন)।
প্রতিবেদক: আসি।
সালমান: রিং (ফোন) কইরেন।
এটাই প্রতিবেদকের সাথে সালমানের শেষ আলাপচারিতা। আর সেই রিং ব্যাক করা হয়নি!