সত্যজিৎ রায়ের ভোজনবিলাস ও ফেলুদা
বাঙালি মাত্রই ভোজনরসিক। এই কথাটা সবাই মানে। কিংবদন্তি সাহিত্যিক ও চলচ্চিত্র নির্মাতা সত্যজিৎ রায়ও এর ব্যতিক্রম নয়। তাই তো, তাঁর সিনেমাই হোক বা লেখা – সবখানেই নানা ধরণের খাবার দাবারকে গুরুত্ব দিয়েছেন। মোমো বলে যে একটি খাবার হয় তা আমরা অনেকেই সত্যজিৎ রায়ের লেখাতেই প্রথম পাই।
এই লেখায় আমরা সত্যজিতের ফেলুদা সিরিজে বিভিন্ন খাওয়ার উল্লেখ পাওয়া যায় সেটা তুলে ধরার চেষ্টা করলাম। যদি কিছু বাদ যায় কেউ যোগ করতে পারেন। তবে চা আর চানাচুর ফেলুদার গল্পের অবিচ্ছেদ্য অংশ বলে সেটা আর উল্লেখ করিনি।
ফেলুদার গোয়েন্দাগিরি: মুরগির মাংস।
বাদশাহী আংটি: সান্ডিলা লাড্ডু, ভুনা পেড়া, গুলাবি রেউড়ি, মুরগির ঠ্যাং।
কৈলাস চৌধুরীর পাথর: রসগোল্লা, অমৃতি, জিলিপি।
শেয়াল দেবতা রহস্য: ভাত, সোনামুগ ডাল, চাটনি, দই।
গ্যাংটকে গণ্ডগোল: ওমলেট, মাছ ভাজা,পাঠার মাংসের ঝোল, লুচি, আলুর তরকারি, চিকেন কাটলেট।
সোনার কেল্লা: গুলাবি রেউড়ি, রুটি-মাংস, জিভে গজা।
বাক্স রহস্য: ডিমের ওমলেট, বেকড বিনস, রুটি মাখন মারমালেড, কমলালেবু, সুপ, মাছ।
সমাদ্দারের চাবি: জিলিপি।
কৈলাসে কেলেঙ্কারি: রুটি, মাংস, তরকা,মিহিদানা, নতুন গুড়ের সন্দেশ, ওয়ার্ডলফের চীনা খাবার, খিচুড়ি, ইলিশ মাছ ভাজা, ডিমের বড়া, বেগুনি, ডাল-মাংস।
রয়্যাল বেঙ্গল রহস্য: ডিম টোস্ট।
জয় বাবা ফেলুনাথ: হালুয়া সোহন, ফাউল কারি, মাংসের কালিয়া, ডাল, ভাত কপির তরকারি, মাছের ঝোল, দই, জিলিপি, রাবড়ি, লুচি মাংস।
ঘুরঘুটিয়ার ঘটনা: মোচার ঘন্ট, তিন রকমের তরকারি, সোনা মুগের ডাল, রুই মাছের ঝোল।
বোম্বাইয়ের বোম্বেটে: ডায়মন্ডা, ভেলপুরী, রুমালি রুটি, পোলাও, নার্গিসি কোফতা কুলপি, ডালমুট, মানঘিরমের বিস্কুট, পেরির লজনচুস, কমলালেবু, মটন দো পেঁয়াজা, নান, পাকোড়া।
গোসাইপুর সরগরম: চিড়ে ভাজা, তিন রকমের তরকারি, মুগের ডাল, ডিমের ডালনা, মাছের মুড়ো।
গোরস্থানে সাবধান: খিচুড়ি, ডিমভাজা, ব্লু ফক্স এর স্যান্ডউইচ, নিজাম এর মটন রোল।
ছিন্নমস্তার অভিশাপ: মুরগির কারী, অড়হর ডাল, পরোটা,আলুর দম মাংসের কাবাব।
হত্যাপুরী: কাঁচকলার কোফতা, সুফলে।
গোলকধাম রহস্য: সিঙ্গাড়া, রাজভোগ।
যত কাণ্ড কাঠমান্ডুতে: রাইস কারি, স্যান্ডউইচ, মোমো, রাইস ফিশ কারি, পাই, পুরি তরকারি।
নেপোলিয়নের চিঠি: রয়্যালের বিরিয়ানি, কচুরি আলুর তরকারি।
টিনটোরেটোর যীশু: সাপের মাংস, সাপের সুপ, ফ্রায়েড স্নেক, ডাল, মাছ, শুকতো।
অম্বর সেন অন্তর্ধান রহস্য: মুরগির কাটলেট।
জাহাঙ্গীরের স্বর্ণমুদ্রা: ইলিশ মাছ।
এবার কাণ্ড কেদারনাথে: তেমন কিছু নেই, তবে জটায়ু আরমাডিলোর ডিমের ডালনা খাবেন বলে বায়না ধরেছিলেন।
বোসপুকুরে খুনখারাপি: এখানেও তেমন কিছু নেই। তবে প্রথম বিয়ারের কথা শোনা যায় ফেলুদার গল্পে।
দার্জিলিং জমজমাট: ফিশ ফ্রাই।
ভূসর্গ ভয়ংকর: ভাত, মুরগির কারি।
শকুন্তলার কণ্ঠহার: মোগলাই খানা।
ডাঃ মুন্সীর ডায়েরী: খাই খাই এর সিঙ্গারা।
নয়ন রহস্য: চিকেন টিক্কা কাবাব, চিকেন স্যান্ডউইচ।
রবার্টসনের রুবি: লাড্ডু।
জীবদ্দশায় ফেলুদা সিরিজের আরো চারটি উপন্যাস লিখে গেছেন সত্যজিৎ রায়। সেগুলো হল – ইন্দ্রজাল রহস্য, অপ্সরা থিয়েটারের মামলা, গোলাপি মুক্তা রহস্য, লন্ডনে ফেলুদা। তবে, এর কোনোটাতেই খাবারের বিশেষ কোনো উল্লেখ নেই।