বাংলাদেশ কাঁপানো খলনায়কের গল্প
১৯৭৯ সালে ‘রাখে আল্লাহ মারে কে’ সিনেমায় অভিনয়ের মধ্যদিয়ে অভিষেক ঘটে অভিনেতা রাজীবের, ওয়াসিমুল বারী রাজিব। ঢালিউডের ইতিহাসের অন্যতম সেরা খল নায়ক। পরবর্তীতে তিনি কাজী হায়াতের ‘খোকন সোনা’ চলচ্চিত্রে নায়ক রুপে অভিনয় করেন।
রাজীবের ক্যারিয়ারের শুরুটা ছিল ফ্লপ। যদিও শুরুটা ছিল নায়ক হিসেবে, কিন্তু সফল হয়েছিলেন খল নায়ক হিসেবে। বাংলা চলচ্চিত্রে সেরা খল অভিনেতাদের মধ্যে তিনি অন্যতম হয়ে যান কিছুদিনের মধ্যেই।
অভিনয়ে আসার আগে তিনি তিতাস গ্যাস কোম্পানিতে চাকরি করতেন। নব্বই দশকে এসে খল চরিত্রে অভিনয়ের পাশাপাশি পার্শ্ব চরিত্রে নিয়মিত অভিনয় করা শুরু করেন, এখানেও তিনি নিজ আলোয় আলোকিত ছিলেন।
অভিনয়ের বাইরে তিনি বন্ধু ও সহকর্মী মিজু আহমেদের সাথে প্রযোজনা সংস্থা চালু করেন। সেখান থেকে বেশকিছু ব্যবসাসফল সিনেমা নির্মিত হয়। এছাড়া তিনি এফডিসির সভাপতির দায়িত্ব পালন করার পাশাপাশি রাজনীতিতেও বেশ সক্রিয় ছিলেন।
বর্নিল ক্যারিয়ারে তিনি চারবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেন। তিনি সহ অভিনেতা হিসেবে হীরামতি (১৯৮৮), দাঙ্গা (১৯৯১), বিদ্রোহ চারিদিকে (২০০০) ও সাহসী মানুষ চাই (২০০৩) সিনেমার জন্য জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেন।
- উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্র
খোকন সোনা, ভাত দে, হীরামতি, বিরাজ বউ, সাহেব, সাজানো বাগান, দাঙ্গা, চাঁদাবাজ, অন্ধ বিশ্বাস, কেয়ামত থেকে কেয়ামত, অন্তরে অন্তরে, বিক্ষোভ, দেনমোহর, স্বপ্নের পৃথিবী, স্বপ্নের ঠিকানা, সত্যের মৃত্যু নেই, মহামিলন, প্রেম পিয়াসী, বুকের ভিতর আগুন, আসামী গ্রেফতার, স্নেহের প্রতিদান, চালবাজ, হাঙ্গর নদী গ্রেনেড, প্রাণের চেয়ে প্রিয়, ভালোবাসি তোমাকে, প্রেমের তাজমহল, স্বপ্নের বাসর, আব্বাজান, বিদ্রোহ চারিদিকে, হৃদয়ের বন্ধন, ভালোবাসা কারে কয়, ও প্রিয়া তুমি কোথায়, মেঘের পরে মেঘ, মেঘলা আকাশ, মিস ডায়না, বলো না ভালোবাসি, বিসর্জন।
অমর নায়ক সালমান শাহর বেশিরভাগ ছবিতেই সহ অভিনেতা হিসেবে রাজীবকে দেখা যেত। দু’জনের মধ্যে খুব ভালো সম্পর্ক বিদ্যমান ছিল। সালমান শাহ রাজিবকে পিতৃতুল্য হিসেবে সম্মান করতেন।
আজ বাংলা চলচ্চিত্রের স্বনামধন্য ও জনপ্রিয় এই অভিনেতার ১৯৫২ সালের ১ জানুয়ারি পটুয়াখালীর দুমকিতে। ২০০৪ সালের ১৪ নভেম্বর ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন। শেষ জীবনটা তাঁর জন্য সুখকর ছিল না। যেখানেই থাকুন, ভাল থাকবেন কিংবদন্তি!