রাজা থেকে পথের ভিখিরি: সৌরভ, ধোনি ও ভারতীয় ক্রিকেট
চিরদিন কাহারো সমান নাহি যায়!
আমার ধারণা, ক্রিকেট দিয়ে কাজী সাহেবের বলা দুনিয়ার এই উত্থান-পতন ব্যাখ্যা করা যায়।
এই ভারতীয় ক্রিকেটের কথাই ধরুন।
একসময় অধিনায়ক সৌরভ গাঙ্গুলির কথায় বাঘে-মোষে এক ঘাটে জল খেতো। বোর্ড অব কনট্রোল ফর ক্রিকেট ইন ইন্ডিয়ার (বিসিসিআই) নির্বাচকরা তার কথার বাইরে যাওয়ার সাহস পেতেন না। সৌরভের পছন্দ ছিলো বলে শেবাগ, জহির খান, হরভজনরা জাতীয় দলে এসেছেন।
আবার সেই সৌরভ শেষ সময়ে দলে একটু ঠাই পেতে কী অবমাননার ভেতর দিয়ে গেছেন। তাকে গ্রেগ চ্যাপেল সম্রাট থেকে পথের ভিখিরি বানিয়ে ছেড়েছিলেন।
কী কাকতাল!
সৌরভকে যখন চূড়ান্তভাবে দরজাটা দেখিয়ে দেওয়া হয়, তখন জাতীয় দলে অধিনায়ক হিসেবে কেবল বিকশিত হচ্ছেন ‘দ্য আউটসাইডার’ মহেন্দ্র সিং ধোনি।
সেই ধোনি কালক্রমে সৌরভের চেয়েও ক্ষমতাধর অধিনায়ক হলেন।
এন শ্রীনিবাসনের সাথে দোস্তি করে তিনি বোর্ডের, নির্বাচকদের চেয়ে বড় হয়ে উঠলেন। তার পছন্দ-অপছন্দে অনেকের ক্যারিয়ার নির্ধারিত হয়েছে। শ্রীনিবাসন তাকে ক্রিকেটার থেকে ইন্ডিয়া সিমেন্টের অন্যতম মালিকেও পরিণত করেছিলেন।
সেই ধোনির আজ নীরবে যেনো শেষকৃত্য হয়ে গেলো।
সেই ভারতীয় বোর্ডের প্রধান হয়েছেন আবার সেদিনের সেই রাস্তায় থাকা সৌরভ। কাগজে কলমে অন্তত ক্রিকেটের সবচেয়ে ক্ষমতাধর পদটা দখল করেছেন উঠে এসে।
আর সৌরভের সময়েই হারিয়ে গেলেন যেনো ধোনি।
বিশ্বকাপের পর থেকে আর দলে ডাক পাননি। কেউ খোজও পেলো না ধোনি কোথায়। এক সময়ের প্রতাপশালী ধোনি নীরবে বাদ পড়ে গেলেন বোর্ডের চুক্তি থেকে। হয়তো, আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ক্যারিয়ারে এরই মধ্য দিয়ে লেগে গেল তালা।
কাজীদা তো কোন আমলে বলেছেন, আজকে যে রাজাধিরাজ, কাল সে ভিক্ষা চায়!
– ফেসবুক ওয়াল থেকে
